Sunday, December 12, 2010

Flying Fish

কয়েক দিন ধরে সাগরে নিম্নচাপ চলছে। জেলেরা উদ্বিগ্ন, সমুদ্রের গভীরে না গিয়ে কাছাকাছি মাছ ধরছেন। হঠাৎ পাখির মতো একঝাঁক মাছ উড়াল দিয়ে শূন্যে ভেসে উঠল। এদের কয়েকটি গিয়ে পড়ল জেলেদের জালে। জেলেদের আনন্দ আর দেখে কে। কক্সবাজারে জেলেদের কাছে এ প্রজাতির মাছ পাখি মাছ হিসেবে পরিচিতি। জেলেদের কাছে এ মাছ তেমন একটা পরিচিতি লাভ করেনি। এ পাখি মাছেরা হঠাৎ উড়ে এসে অথৈ সাগরের বিস্তীর্ণ জলরাশি মাতিয়ে রাখে। কক্সবাজারে বাঁকখালী নদী তীরের ফিশারি ঘাটে জেলেরা এদের নিয়ে এলো বিক্রির জন্য। সুস্বাদু এ মাছ চড়া দামে বিক্রয়ও হয়ে যায়।

সাগরে আমরা যদি কখনো কোনো মাছকে উড়তে দেখি নিশ্চয়ই আশ্চর্য হব। আবার কোনো অচিন পাখি মনে করে ভুলও করতে পারি। এ পাখিটি যখন পানির মধ্য থেকে হুট করে ভেসে ওঠে কিছুক্ষণ আকাশে উড়ে আবার পানিতে ডুব দেয় তখন নিঃসন্দেহে বলা যায়, এটা মাছই হবে, পাখি নয়। এদের ইংরেজি নাম ঋষুরহম ঋরংয বৈজ্ঞানিক নাম ঊীড়পড়বঃঁং চড়বপরষড়ঢ়ঃবৎঁং. মাছটি লম্বায় কয়েক ফুট হতে পারে। মাছের পৃষ্ঠদেশ হালকা নীল বর্ণের। অঙ্গদেশ এবং পার্শ্বদেশ রুপালি। বক্ষপাখনা দীর্ঘ, লাল গোলাকার ফোটা থাকে। এ মাছটি বক্ষপাখনা ছড়িয়ে দিয়ে ঘণ্টায় প্রায় ৩৫ মাইল বেগে আকাশে উড়তে পারে। আসলে কিন্তু সে পাখির মতো ডানা ঝাপটিয়ে উড়ে বেড়াতে পারে না বরং উঁচু স্থান থেকে মানুষ যেমন গ্লাইটারের সাহায্যে ভেসে বেড়ায়। এক্ষেত্রে পাখিটি মাছটিও তার বুকের দুটি পাখনাকে পাখির মতো ছড়িয়ে দিয়ে বলা যায় গ্লাইড করে। তবে গ্লাইডিংয়ের জন্য উঁচু স্থান থেকে যেমন লাফিয়ে পড়তে হয় এক্ষেত্রে পাখি মাছ তার লেজের প্রচণ্ড শক্তি দিয়ে নিজেকে পানির উপরে ছুড়ে দেয়। এ সময় মাছটি এর লেজকে সেকেন্ডে ৫০ বার মটরের মতো কাজ করে দেহকে শূন্যে ছুঁড়ে দেয়। মাছটি কিন্তু মনের আনন্দে শূন্যে ভেসে বেড়ায় না, বরং যখন সে শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয় তখনই জান বাঁচাতে এভাবে শূন্যে ভেসে বেড়ায়। এভাবে সে এক মিনিট উড়তে পারে। যদি বাতাসের গতি ভালো থাকে তবে প্রায় ১০-২০ ফুট উঁচুতে উড়তে পারে। এদের কোনো কোনো প্রজাতির শুধু বুকের পাশের দুটি ফিনকেই পাখার মতো কাজে লাগায় আবার কোনো প্রজাতি বক্ষ এবং শ্রেণী উভয় জোড়া পাখনাকেই উড়তে কাজে লাগায়। এরা মূলত সাগরে বসবাস করে। এদের শরীরে প্রচুর আঁইশ আছে। এরা প্রধানত অমেরুদণ্ডী প্রাণী এবং ছোট ছোট মাছ খেয়ে বেঁচে থাকে।

- আসাদুজ্জামান আসাদ

Source: bangladesh-pratidin, 13th December, 2010

No comments:

Post a Comment